পেয়াজ চাষ করার নিয়ম | লাভজনক ব্যবসার সুযোগ!

বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে পেঁয়াজ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফসল। রান্নার প্রায় প্রতিটি খাবারেই পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা সর্বদা উচ্চ থাকায় পেঁয়াজ চাষ কৃষকদের জন্য লাভজনক ব্যবসার সুযোগ তৈরি করেছে। উন্নত জাতের পেঁয়াজ চাষ করে আরও বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।

উন্নত জাতের পেঁয়াজের বৈশিষ্ট্য:

উচ্চ ফলন: উন্নত জাতের পেঁয়াজের ফলন স্থানীয় জাতের তুলনায় অনেক বেশি।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: উন্নত জাতের পেঁয়াজ বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ধারণ করে।

দ্রুত বৃদ্ধি: উন্নত জাতের পেঁয়াজ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং কম সময়ে পরিপক্ক হয়।

ভালো মান: উন্নত জাতের পেঁয়াজের আকার, রঙ, স্বাদ এবং সংরক্ষণযোগ্যতা ভালো।

বাজারে চাহিদা: উন্নত জাতের পেঁয়াজের বাজারে উচ্চ চাহিদা রয়েছে।

বারি অনুমোদিত উন্নত জাতের পেঁয়াজ:

বারি পেঁয়াজ-১: শীতকালীন জাত, লালচে বর্ণের, তীব্র স্বাদের, দীর্ঘ সংরক্ষণযোগ্যতা, বাজারে উচ্চ চাহিদা;

বারি পেঁয়াজ-২: খরিফ জাত, হলুদ বর্ণের, মৃদু স্বাদের, দ্রুত বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি;

বারি পেঁয়াজ-৩: শীতকালীন জাত, লালচে বর্ণের, তীব্র স্বাদের, মোটা খোসা, দীর্ঘ সংরক্ষণযোগ্যতা;

বারি পেঁয়াজ-৪: শীতকালীন জাত, লালচে বর্ণের, পাতলা খোসা, দ্রুত বৃদ্ধি, বাজারে উচ্চ চাহিদা;

বারি পেঁয়াজ-৫: খরিফ জাত, হলুদ বর্ণের, মৃদু স্বাদের, মোটা খোসা, দীর্ঘ সংরক্ষণযোগ্যতা;

বারি পাতা পেঁয়াজ-১: সারা বছর চাষ করা যায়, পাতা লম্বা ও সবুজ, দ্রুত বৃদ্ধি, বাজারে উচ্চ চাহিদা;

পেয়াজের পুষ্টিগুণ:

পেঁয়াজ ভিটামিন সি, কে, বি৬, ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম এবং ফাইবারের একটি ভালো উৎস। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও প্রচুর পরিমাণে থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও, পেঁয়াজ হজমশক্তি উন্নত করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

বপনের সময়:

খরিফ মৌসুম: জুলাই-আগস্ট

বাংলাদেশে পেঁয়াজ বপণের সময় নির্ভর করে দুটি মৌসুমের উপর। যথা: রবি মৌসুম যেখানে বীজ বপন করতে হয় ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসে এবং চারা রোপন করতে হয় এপ্রিল-মে মাসে। আর আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ফসল সংগ্রহ করতে হয়।

আরেকটা হলো গ্রীষ্মকালীন মৌসুম যেখানে বীজ বপন করতে হয় জুলাই-আগস্ট মাসে আর চারা রোপণ করতে হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে। আর ফসল সংগ্রহ করতে হয় ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা উচিত:

জাত: বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ রয়েছে, যার প্রত্যেকটির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং বপনের সময় রয়েছে। আপনার এলাকার জন্য উপযুক্ত জাতগুলি সম্পর্কে জানতে কৃষি বিভাগের সাথে পরামর্শ করুন।

আবহাওয়া: পেঁয়াজ একটি শীতল-মৌসুমী ফসল। অত্যধিক গরম বা ঠান্ডা আবহাওয়া ফসলের উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে।

মাটি: পেঁয়াজ ঝুরঝুরে, ভালোভাবে নিষ্কাশিত মাটি পছন্দ করে। যেমন- বেলে-দোআঁশ মাটি।

সার: পেঁয়াজের জন্য নিয়মিত সার প্রয়োগ প্রয়োজন। চাষের কোন পর্যায়ে কি পরিমাণ কোন সার দিবেন তা নিকটস্থ উপজেলা কৃষি উন্নয়ন কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন।

আরও পড়ুন: তুলসী পাতা | ভেষজ উপকারিতাগুলো জেনে নিন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top